খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

 

আমরা প্রায় সকলেই খেজুর খেয়ে থাকি। খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, খেজুর কখন খাবেন খেজুর খাওয়ার নির্দিষ্ট সময় বা নিয়ম আমাদের জেনে নেওয়া উচিত। তাহলে আমরা সবাই খেজুর থেকে উপকৃত হতে পারব। তাহলে চলুন খেজুরের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিই।

খেজুরের-উপকারিতা-ও-অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ইসলামী বিস্তারিত অনেক আছে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি 'আজওয়া' খেজুর খেজুর খাবে ওই ব্যক্তিকে বিষধর সাপ বা খারাপ কোন জিনিসই ক্ষতি করতে পারবেনা তাকে।

পেজ সূচিপত্র ঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

১৫ টি উপকারিতা খেজুরের

খেজুর অন্তত একটি পুষ্টিকর ফল, যা তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়। তবে খেজুর অতিরিক্ত খেলে ওজন বৃদ্ধি , ডায়াবেটিস, এসিডিটির মত সমস্যা হতে পারে। নিচে ১৫ টি খেজুরের উপকারিতা দেয়া হলো-

  • তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়
  • হজম শক্তি বৃদ্ধি করে
  • হাড় মজবুত করে
  • রক্তাল্পতা দূর করে
  • হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
  • মস্তিষ্ক সতেজ রাখে
  • শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে
  • ভালো ঘুম হয়
  • দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
  • পুরুষদের জন্য উপকারী
  • ক্যান্সারে ঝুঁকি কমায়
  • গলায় ক্ষত ঠান্ডা সারে
  • ক্যান্সার ও পটাশিয়াম এর উৎস

খুরমা খেজুরের উপকারিতা

খুরমা খেজুরে থাকা প্রতিটি শর্করা ও ফাইবার শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায় এবং হজম ক্ষমতা বাড়ায়। এটি পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এর মত খনিজ পদার্থের উৎস হওয়ায় রক্তচাপে নিয়ন্ত্রণ ও হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খুরমা খেজুরের খুবই উপকারী। এছাড়া কোরমা খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজ হাড়ের দাঁতও মজবুত কর্‌ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, এবং রক্তস্বল্পতা দূর করে।

খুরমা খেজুরের উপকারিতা প্রাকৃতিক শক্তির উৎসব প্রাকৃতিক শর্করা। হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে উক্ত ফাইবার উপাদান। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ফাইবার প্রোটাশিয়া , অ্যান্টিঅক্সাইডেন্স সমৃদ্ধ ফ্রী রেডিক্যাল প্রতিরোধ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে খুরমা খেজুর। এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ওজম নিয়ন্ত্রণে রাখে খুরমা খেজুর।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর ভিজে খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। খেজুর ভিজিয়ে খেলে অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরে শক্তি যোগায়। খেজুর পানিতে ভিজিয়ে খেলে হজম শক্তি বাড়ে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হাটের স্বাস্থ্য ভালো রাখে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং শরীরে অনেক শক্তি যোগায়। ভিজিয়ে রাখলে খেজুর ফাইভারে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নরম হয় যার ফলে শরীর সুস্থ সতেজ থাকে। এটি প্রাকৃতিক চিনির একটি চমৎকার বিকল্প হিসেবে কাজ করে,যা প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা নিচে কয়েকটি পদে বিভক্ত করা হলোঃ

  • হজম প্রক্রিয়া উন্নতি করে
  • হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  • শক্তি বৃদ্ধি করে
  • রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখএ
  • প্রাকৃতিক চিনির বিকল্প
  • শরীরের জন্য খুবই উপকারী পুষ্টি
  • ত্বক চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  • হাড় মজবুত করে

খেজুর পানিতে ভিজিয়ে কিভাবে খাবেন

সারা রাত পানিতে খেজুর ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। এই ভেজানো খেজুর এবং তার পানি পানের মাধ্যমে খেজুরে থাকা পুষ্টির উপাদান গুলো শরীর আরো ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারি যার ফলে শরীর অনেক ভালো থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে খেজুর খেলে শরীর তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়, হজম শক্তি বাড়ায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নতি করে এবং হাড়ো দাঁত মজবুত করে। এছাড়া খালি পেটে খেজুর খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং এনিমেনিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে। এটি আয়রন, ফাইবার , ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানে ভোরপুর হোয়াই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।

তবে খালি পেটে খেজুর অতিরিক্ত খেলে কারো কারো গ্যাস বা পাতলা পায়খানা হতে পারে এবং কিডনি বা হাড়ের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বিশেষ উল্লেখ্যঃ

জলে ভিজে খেলে এর উপকার বেশি জল পান করে খালি পেটে খেজুর খেলে হজম আরো সহজ হয় এবং এর পুষ্টি কোন ভালোভাবে গ্রহণ করা যায় এটি প্রথম আলোতে লক্ষ্য করা হয়েছে। পরিমাণঃ খালি পেটে তিন থেকে পাঁচটি খেজুর খাওয়া ভালো। তবে নির্দিষ্ট কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা  যেমন ডায়াবেটিকস থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

বাদামের সাথেঃ খেজুরের সাথে বাদাম খেলে প্রোটিন ফাইবারের যৌগ ফল বাড়ে, যা দিনের শুরুতে আরো বেশি এনার্জি দিতে পারি।

আরো পড়ুনঃ ঘি খাওয়ার উপকারিতা

ওজন কমাতে কোন ধরনের খেজুর খাওয়া ভালো

সবচেয়ে ভালো খেজুর কোনটি, এটি ব্যক্তিগত পছন্দ ও স্বাস্থ্যের চাহিদা উপর নির্ভর করে। তবে, স্বাস্থ্যকর ও জনপ্রিয় খেজুরের মধ্যে আজোয়া, মেডজুল, এবং মারিয়াম এগুলো খেজুর উল্লেখযোগ্য। আজওয়া খেজুর এন্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর পদ্মা হবিরোধী গুণসম্পন্ন, মেডজুল খেজুর ক্যারামেল মধুর মত মিষ্টি স্বাদের জন্য পরিচিত, এবং মারিয়াম খেজুর উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন। ভালো খেজুর চেনার জন্য এর ত্বক মসৃণ না হয়ে কিছুটা কোঁচকানো হবে এবং তা অতিরিক্ত শক্তকে হবেনা অতিরিক্ত চকচকে খেজুর রাসায়নিক দ্বারা প্রক্রিয়াজাত হতে পারে।

জনপ্রিয় স্বাস্থ্যকর খেজুরের জাতঃ

  • আজওয়া খেজুর-সৌদি আরবের মদিনা এর চাষ হয়। এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক। এর প্রাকৃতিক শর্করা আশ সুষম্ম পরিমাণ থাক।
  • মেডিজুল খেজুর-খেজুরের নামা রাজা নামে পরিচিত এটি বড় নরম এবং ক্যারামেল ও মধুর মত মিষ্টি গন্ধযুক্ত, যা এর সমৃদ্ধ মাংসের সাথে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা দেয়।
  • মারিয়াম খেজুর-উচ্চ পুষ্টি গুণ সম্পন্ন এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
  • মাবরুম খেজুর-এটিও একটি জনপ্রিয় এবং ভালো মানের খেজুর হিসেবে পরিচিত

ভালো খেজুর চেনার উপায়


ত্বকের অবস্থাঃ ভালো খেজুর সরষের তেল, গুড় বা কোন রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয় না। তাই ভালো খেজুর উপরিভাগ বেশি চকচকে না হয় কিছুটা কোঁচকানো ও শুকনো হবে।
অতিরিক্ত নরম বা শক্ত নয়ঃ খেজুর কোঁচকানো ভাব থাকলেও সেটি খুব বেশি নরম বা অতিরিক্ত খুব শক্ত হওয়া উচিত নয়।
পোকা ও শত্রাকঃ পোকা, পচা বা ছত্রাক যুদ্ধ খেজুর এড়িয়ে চলুন।

উৎপত্তিস্থলঃ মদিনা ও সৌদি আরবের খেজুর ভালো মানের হয়।

রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

রাতে খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় শক্তি বাড়ায়, এবং হৃদপিণ্ড সুস্থ থাকে। খেজুরের থাকা ফাইবার হজম শক্তি বাডায় এবং রক্তের শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা ভালো তোমার জন্য উপকারী হতে পারে। এটি শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও খনিজ সরবরাহ করে এবং প্রাকৃতিক শতকরা হিসেবে তাৎক্ষণিক শক্তি যোগায়।

রাতে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

  • হজম শক্তি বৃদ্ধি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর
  • হৃদপিণ্ড স্বাস্থ্য
  • ভালো ঘুম
  • পুষ্টি সরবরাহ
  • অ্যানিমিয়া প্রতিরোধ
  • ইমিউনিটি বৃদ্ধি
  • প্রাকৃতিক চিনির বিকল্প

রাতে দুধের সাথে খেজুর মিশিয়ে খেলে তা পুষ্টি গুণ বাড়ায় এবং ছোট থেকে বড় সবার জন্য উপকারী। 

শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

শুকনো খেজুর থাকা শর্করা, ফাইবার ভিটামিন ও খনিজ উপাদান শরীরকে শক্তি যোগায়, হজম ক্ষমতা বাড়ায় , হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে এবং হৃদরোগের ঝুকি কমায়। এটি এন্টিঅক্সিডেন্ট এ ভরপুর হওয়ায় শরীরকে ফ্রি মেডিকেলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতাঃ

  • তাৎক্ষণিক শক্তি বৃদ্ধি করে
  • হজম ক্ষমতা উন্নতি করে
  • আহারে স্বাস্থ্য রক্ষা করে
  • হৃদরোগে ঝুকি কমায়
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে 
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
  • মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়

শুকনো খেজুর থেকেই সতর্ক থাকতে হবে যাদের হাঁপানি আছে, তাদের খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ এতে থাকা ছাচ এলার্জির কারণ হতে পারে। এছাড়াও যাদের প্রকাশের বেশি তাদেরকে খেজুর খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে খেজুর খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে এবং গ্যাস বা পেটের অনেক সমস্যা হতে পারে।

পুরুষের জন্য খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

পুরুষের জন্য খেজুর শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে, আমার মনের ভারসাম্য রক্ষা করে, এবং ওজনের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। খেজুর রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়াতে উন্নত করে ত্বক ভালো রাখে এবং এন্টিঅক্সিডেন্টের কারণে বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে রক্ষা করে। এছাড়াও, খেজুরে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে এবং ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। খেজুরে কিছু হরমোন সাবধান নিঃসরণ করতে পারে এবং হর মনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে।

খেজুরে প্রাকৃতিক এন্টিঅক্সিডেন্ট একটি ভালো উৎসব  হিসেবে কাজ করে। খেজুর লোহিত রক্তকণিকা উপাদান বৃদ্ধির মাধ্যমে হিমোগ্লোবিন মাত্রা উন্নত করতে পারে।

খেজুর কিভাবে খাবেঃ'

  • প্রতিদিন সকালে তিন থেকে পাঁচটি খেজুর খালি পেটে খেতে পারেন।
  • রাতে ঘুমানোর আগে গরম দুধে ভিজিয়েও খেতে পারেন, যা শারীরিক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
  • রোগীরা সীমিত পরিমাণে খাবেন।

খেজুর খাওয়ার অপকারিতা

খেজুর অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ওজন বৃদ্ধি, উচ্চ শর্করার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা এলার্জি এবং হজমের সমস্যা হতে পারে।এটি শরীরের তাপ উৎপন্ন করে , তাই গরমে খেজুরের পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত।

কারা খেজুর এড়িয়ে চলবেন বা পরিমিত খাবেনঃ

  • ডায়াবেটিক্স রোগী
  • এলার্জি সমস্যা যাদের
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান যারা
  • শরীর গরম হয়ে যায় যাদের

শেষ কথাঃ খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা সম্পর্কে কোন কিছু পাওয়া যায় না তবে মনে রাখতে হবে বেশি ভোগ শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আশা করি খেজুরের উপকারিতা পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন উপকৃত হয়ে থাকলে কমেন্ট বক্সে গিয়ে কমেন্ট করুন। খেজুরের উপকারিতা অনেক অপকারিতা নেই বললেই চলে কারণ খেজুর একটি ইসলামিক ফল যা নবী প্রচুর পরিমাণে খেত...

এতক্ষণ এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ পরবর্তী আর্টিকেলটি করার জন্য আপনাকে স্বাগতম।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নয়ন২৪ এ নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url